সড়ক দুর্ঘটনার অতিরঞ্জিত তথ্য প্রকাশ

যাত্রী কল্যাণের মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবে বিআরটিএ

Passenger Voice    |    ০২:৩৮ পিএম, ২০২৪-০১-১৬


যাত্রী কল্যাণের মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবে বিআরটিএ

জয়নাল আবেদীন: সদ্য বিদায়ী বছর ২০২৩ সালে সারা দেশে ৬ হাজার ২৬১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৯০২ জন নিহত ও ১০ হাজার ৩৭২ জন আহত হয়েছে বলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দেয়া তথ্যকে অতিরঞ্জিত বলছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। একই সাথে যাত্রী কল্যাণ সমিতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ’র প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিয়ংন্ত্রণ সংস্থার চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার এই মন্তব্য এই করেন। এই সময় উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএর পরিচালক (প্রশাসন) আজিজুল ইসলাম (যুগ্ন সচিব), পরিচালক (অপারেশন) লোকমান হোসেন মোল্লা, পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শিতাংশু শেখর বিশ্বাস, পরিচালক (রোড সেফটি) মাহবুব রাব্বানী, উপ-পরিচালক প্রশাসন আবদুর রাজ্জাক (যুগ্ন সচিব পদোন্নতি প্রাপ্ত) প্রমুখ। 

বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ২০২৩ সালে বিআরটিএর রিপোর্ট অনুযায়ী ৫ হাজার ৪৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ২৪ জন নিহত, বাংলাদেশ পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী ৫ হাজার ৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ হাজার ৪৭৫ জন নিহত, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ৬ হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫২৪ জন এবং বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির রিপোর্ট অনুযায়ী ৬ হাজার ২৬১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৯০২জন নিহত হয়েছে। সুতরাং এ তথ্য থেকে প্রতীয়মান হয়, সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির রিপোর্ট অতিরঞ্জিত। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বিরুদ্ধে লিগ্যাল অ্যাকশনে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান

তিনি আরও বলেন, বিআরটিএর সংগৃহীত সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য নিয়মিত বিআরটিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হচ্ছে। বিআরটিএর বর্ণিত তথ্যের বাইরে অন্য কোনো তথ্য পাওয়া গেলে বা কোনো অসংগতি থাকলে তা বিআরটিএকে অবহিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতিসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার প্রকাশিত তথ্য বিআরটিএর তথ্যের সঙ্গে অমিল থাকা সত্ত্বেও বিআরটিএকে এ বিষয়ে কোনো কিছু অবহিত করা হয়নি। এতে তাদের প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গ, গত ১৪ই জানুয়ারি সকালে রাজধানীর সেগুণবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩ সালের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন সংগঠনটির  মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরি ।

এর আগে ২০১৬ সালের ১২ই জানুয়ারি বাংলাদেশ সচিবালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৪তম সভা শেষে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনকে ভুয়া বলে আখ্যায়িত করেছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।

এই সময় সড়ক মন্ত্রী বলেন, “যাত্রী কল্যাণ সমিতির রিপোর্টের বেসিসটা কী? কিভাবে তারা রিপোর্ট করে, তাদের মেকানিজমটা কী? এ সংগঠন সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন, এমন একটা ভুয়া রিপোর্ট।

কিন্তু এখানে হঠাৎ করে একটি রিপোর্ট উপস্থাপন করলেন যাতে তথ্য-প্রমাণ নেওয়ার মত কোনো মেকানিজম নেই।

“চট করে এসে উপস্থাপন করলেন, এখানে সভাপতি ও মহাসচিব একজনই, তিনিই সব কিছু করেন, বাকী বিষয়গুলো বললাম না।”

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “এই রিপোর্ট যখন মিডিয়াতে আসে তখন বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, রিপোর্ট তথ্য ভিত্তিক হলে ভাল হয়।"

গণমাধ্যমের উদ্দেশ্য সেতুমন্ত্রী বলেন, "খোঁজ খবর নেবেন-যারা রিপোর্টটা দিলো তারা কারা, আর কিছু বলব না। ডিসেন্ট ল্যাংগুয়েজে বলছি, তাদের রিপোর্ট তথ্যভিত্তিক নয়।”

 

 

প্যা/ভ/ম